মোঃ রাজু মিয়া বিশেষঃ
বর্তমানে দেশের প্রায় ৬৮ হাজারের বেশি নিবন্ধিত খামারে দুধ ও মাংস উৎপাদন হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে এসব খামারের গবাদিপশু দিয়ে সারবছর মাংসের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কোরবানির চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। ফলে এখন আর ভারত থেকে গরু আমদানি করতে হয় না। এতে একদিকে যেমন খামারিরা উপকৃত হচ্ছেন, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে যেখানে দেশে মাংস উৎপাদন হয়েছিল ৩৬ লাখ ২০ হাজার টন, সেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৮৭ লাখ মেট্রিক টন।
জানা গেছে, দেশের আবহাওয়া উপযোগী লেয়ার হাঁস-মুরগির জাত উন্নয়ন, গ্র্যান্ড প্যারেন্ট স্টক ও প্যারেন্ট স্টক খামার স্থাপন, বাণিজ্যিক খামার সম্প্রসারণ এবং মানসম্মত পোলট্রি খাদ্য উৎপাদনে বিনিয়োগের ফলে ডিম উৎপাদনে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে সরকার। বাংলাদেশ পোলট্রি শিল্প কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের তথ্যমতে, প্রায় এক লাখ ৬৫ হাজার মানুষ ডিম ও মাংস উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র, দেশে এখন ৮১ হাজার ৬১৪টি পোলট্রি ফার্ম রয়েছে। এদিকে বিগত দশকে কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, জাত উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং প্রজনন সক্ষমতা দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চাল, মাছ, মাংস ও সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মাছ উৎপাদনকারী দেশ। বর্তমানে পুরো দেশজুড়ে প্রায় ৬৮ হাজারের বেশি নিবন্ধিত খামার রয়েছে, যা থেকে দুধ ও মাংস সহজেই মিলছে।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, দেশে মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে ‘বিফ ক্যাটেল উন্নয়ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে মাংসল জাতের গরু উৎপাদন এবং দুধের উৎপাদন বাড়াতে কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও ভ্রƒণ স্থানান্তর প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করা হয় এবং মহিষ উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। বিএলআরআই লেয়ার-২ বা ‘স্বর্ণা’ নামের একটি লেয়ার স্টেইন উদ্ভাবন করা হয়েছে। মাঠপর্যায়ে মুরগিটির উৎপাদন সক্ষমতা সংক্রান্ত মূল্যায়ন কার্যক্রম চলমান আছে। এ মুরগিটি একটানা বছরে ২৮০টি ডিম দেয়। একই সঙ্গে মাংসের চাহিদাও পূরণ করে।