
মোঃ রাজু মিয়া, বিশেষ প্রতিনিধিঃ বেঁচে থাকতে সব সময় কামনা করতেন একসঙ্গে মৃত্যুর এবং পাশাপাশি সমাধিস্থ হওয়ার। তাদের সেই ইচ্ছাই পূরণ হয়েছে। একই দিনে পৃথিবী ছেড়ে চির বিদায় নিয়েছেন এই বয়স্ক দম্পতি। বলা হচ্ছে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের ইন্দিরাপাড়া গ্রামের আজগার আলী (৮০) ও তার স্ত্রী তহিদা খাতুন (৭২) এর কথা। প্রায় পাঁচ যুগের দাম্পত্য জীবন। এ দীর্ঘ সময়ের পথচলায় কিছু মান-অভিমান থাকলেও ছিল একে অপরের প্রতি অগাধ ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার টানে সবসময় কামনা করতেন একসঙ্গে যেন মৃত্যু হয়, কবরও যেন হয় পাশাপাশি। তাদের সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। একই দিনে পৃথিবী ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন ওই দম্পতি।
জানা যায়, রোজা শেষে বুধবার (১৩ মার্চ) দিবাগত রাতের খাবার একসঙ্গে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন ওই দম্পতি। বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন তহিদা খাতুন। এ সময় ডাকাডাকি করেও স্বামীর সাড়া পাননি। তার কান্না শুনে বাড়ির অন্য লোকজন ছুটে আসেন। তখন তারা বুঝতে পারেন আজগর আলী মারা গেছেন। স্বজনেরা জানিয়েছেন, আজগার আলী ছিলেন কৃষক। তিনি কিছুদিন ধরে অ্যাজমা রোগে ভুগলেও গৃহিণী তহিদা খাতুনের তেমন কোনও রোগ ছিল না। আজগার আলীর মৃত্যুর পর থেকে স্ত্রী তহিদা খাতুন শোকার্ত ছিলেন। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর জানাজা শেষে বাড়ির পাশেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আজগর আলীকে। জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণকারী স্বজনদের অনেকটা শক্ত মনে বিদায় দেন তহিদা খাতুন। একই দিনে রাত আটটার দিকে বাড়িতে হঠাৎ মাথা ঘুরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তাৎক্ষণিক মারা যান তহিদাও। পরে মধ্যরাতে জানাজা শেষে স্বামীর কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।
ওই দম্পতির সন্তান লাভলু মিয়া বলেন, ‘আমার বাবা-মায়ের মধ্যে যে ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব ছিল, তা এ যুগের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দেখতে পাই না। জীবদ্দশায় বাবা-মা সব সময় কামনা করতেন একসঙ্গে মৃত্যুবরণের। আল্লাহ তাদের সেই মনোবাসনা পূর্ণ করেছেন।’