মোঃ রাজু মিয়া, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
আমরা নীল চাষ ছেরে বই চাষে মন দিলাম।কিন্তু আমাদের মানসিকতা উর্বর হলো না। বাঙালি যে আর্য জাতি তার প্রমান দিচ্ছি প্রতি পদে পদে।
বাঙালির ভাষা ও সাহিত্য সমৃদ্ধ,বাংলা ভাষাকে সম্মান করার জন্য বাঙালি ততটা সমৃদ্ধ হতে পারেনি।
গত বছর প্রথম আলোর এক প্রবীন সম্পাদক স্যার এর লেখা পড়ছিলাম।নামটা ঠিক মনে নাই।শিরোনাম ছিলো আমরা বাংলা ভাষাটাকে সম্মান করতে শিখবো কখন?
সমাজের একটা বড় অসঙ্গতি “যুব সমাজ ধ্বংসের মূল কারন কি?” এই নিয়ে সমাজের উচ্চ জ্ঞানীদের একত্র করা হলো। তারা দির্ঘ্য সময় গবেষণা করে ২৬ পেজের এক প্রতিবেদন জমা দিলেন।সম্পূর্ণ প্রতিবেদন এর ভাষা ইংরেজি।এখন কথা হলো এই প্রতিবেদন কাদের জন্য তৈরি করা।যুব সমাজের নাকি ইংরেজদের জন্য।বাংলায় লিখলে কি যুব সমাজ বুঝতে পারতো না?
কয়েকদিন আগে কয়েকটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক বিজ্ঞাপন দিয়েছে বাংলাদেশের সনামধন্য পত্রিকায়।বিজ্ঞাপনের কোথাও বাংলার দেখা পেলাম না।এটা তো শুধু ইংরেজি মিডিয়াম এর শিক্ষার্থীদের জন্য ছিলো না।তাহলে কি বাংলায় বিজ্ঞাপন বুঝতো না শিক্ষার্থী? কোনটা?
পৃথিবীর ইতিহাস বাঙালি একমাত্র জাতি যাদের স্বাধীনতার মূলে ছিলো ভাষা।তাহলে সেই ভাষায় এতো অনাদর কেন?
চাকরিতে ইংরেজিতে কথা বললে কেন তাদের বেশি সুযোগ দেয়া হবে?কেউ একজন গোছালো বাংলায় কথা বললে তাকে বেশি সুযোগ দেয়া হবেনা কেন?
কেন ইংরেজি বললে তাকে স্মার্ট বলা হবে?যে সুন্দর বাংলায় আবৃত্তি করলো,শুদ্ধ বাংলায় উপস্থাপন করলো সে কেন স্মার্ট নয়।
আমাদের টেবিলে বইয়ের চাষ বাড়লেও আমাদের মাথায় সুশিক্ষার চাষ হচ্ছে না।
আমাদের দেশে নিম্মভাবে ধরলে ১২ বছর বাংলা পড়া সবার জন্য বাধ্যতামূলক। বিশ্ববিদ্যালয়েও বাংলা পড়ার সুযোগ আছে।তবুও আমরা বাংলা শিখছি না কেন?
বাংলা লিখতে পারি না,বাংলা সম্পাদন করতে পারিনা কেন?
আমাদের ভাষা বাংলা জন্য বাংলা শিখতে আমাদের অনিহা।আমরা মনে করি বাংলা উচ্চারণ করে পড়লেই মনে করা হয় বাংলা শিখে গেছি।হাজার হাজার ছাত্র বাংলা নিয়ে ১৬ বছর পড়াশোনা করেও দীর্ঘনিশ্বাস নিয়ে পত্রপত্রিকা,রেডিও টেলিভিশন,ও প্রকাশনা সংস্থায় কাজের জন্য চিরুনি তল্লাশি করে খুজতে হয় শিক্ষার্থীদের।এর পেছনে রয়েছে আমার পাঠ্যক্রম।আমাদের পাঠ্যবিষয় নির্ধারন হলেও,পাঠ্যক্রম সুন্দর নির্ধারন হয়নি।তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০,৪০ টা কোর্চ পড়েও প্রমিত বাংলা বলতে পারিনা।যেটা আমাদের শেখা উচিত মাধ্যমিক স্কুলে।
আমি বলছি না আমাদের কবিতা লিখতে হবে-কিন্তু আমাদের তো কবিতা বোঝানোর দক্ষতা,নাটকের সারমর্ম,কোনো লেখা কাটাছেরা করে সম্পাদন করার দক্ষতা তো থাকা উচিত।
আমি বলছি না আমাদের আবৃত্তিকার হতে হবে।কিন্তু আমাদের সৃজনশীল ও সঠিক বাংলা উচ্চারণ করতে শেখা প্রয়োজন।
আজ ২১ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস।
শ্রদ্ধা ভরে স্মরন করছি যাদের জন্য মুক্ত চিন্তায় লিখতে পারছি।যাদের ত্যাগের বিনিময় পেলাম প্রিয় স্বাধীনতা।সকল মুক্তিযোদ্ধাদের আল্লাহ শহীদের মর্জাদা দান করুক।
আজ থেকে শুরু হোক আমাদের ভাষা সমৃদ্ধির কাজ।বাংলা ভাষাকে সংরক্ষনের কাজ।আমাদের ভাষা হোক সমৃদ্ধ,সুন্দর, সম্মানিত।
২১ ফেব্রুয়ারী মাতৃভাষা দিবস বয়ে আনুক আমাদের ভাষার সম্মান।
মোদর গর্ব মোদরে আশা,
আহ্ মরি বাংলা ভাষা।।
লেখক- মো: রাজু মিয়া