একটুখানি সুখের আশায় কত কিছু করলাম
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বাড়ি গাড়ি গড়লাম।
গ্রামের পরে গ্রাম কিনিয়া হইলাম জমিদার
সুন্দরী বউ ঘরে এনে সাজাইলাম সংসার।
গড়লাম রঙিন দালান কোঠা গড়লাম বালাখানা
জোগাড় করলাম হীরা মতি মুক্তা সোনাদানা।
রাজপ্রাসাদে লক্ষ টাকার জাজিম পেতে শুই
কেন জানি ঘুম আসে না একলা জেগে রই।
জগতের সব অস্থিরতা মাথায় করে ভর
বুকে ওঠে থেকে থেকে বিষণ্ণতার ঝড়।
বিশ্বভুবন লাগে বড় তিক্ত বিষাদময়।
ধন-দৌলত আর প্রাচুর্য কে ও তুচ্ছ মনে হয়।
একলা জেগে ছটফট করি স্তব্ধ নিঝুম রাত
নিল জোছনা জানালা দিয়ে বাড়িয়ে দিলো হাত।
মুছে দিল চোখে উঠা বিষন্নতার জল
জোছনা জলে দুঃখরা সব হয়ে গেল তল।
আকাশ ভরা তারার মেলা ফুল ফুটেছে বনে
পূর্ণিমা চাঁদ করছে খেলা সাদা মেঘের সনে।
উদাস আঁখি হারিয়ে গেল হাজার তারার ভীড়ে
মেঘের দেশে চাঁদের দেশে সুখ সাগরের তীরে।
হাজার রঙের ফুল ফুটেছে বকুল চাপার বনে
দখিন হাওয়া সেথায় যেতে আঁচল ধরে টানে।
প্রেমের টানে ফুল বনে যাই গন্ধে ভরি বুক
মুগ্ধমনে আঁচল ভরে কুড়াই যত সুখ।
মাটির গায়ে সবুজ চাদর আকাশ ভরা নীল
দিঘির জলে হাঁসের খেলা দূর গগনে চিল।
তারা আমায় ডেকে বলে আয়রে ছুটে আয়
দুঃখে ভরা প্রাসাদ ছেড়ে সুখের দুনিয়ায়।
সকল ফেলে হারিয়ে যাই আউল-বাউল বেশে
জোছনা জোনাক চন্দ্র তারা ফুল পাখিদের দেশে।
প্রকৃতিতেই সুখ খুঁজে পায় বৈরাগী এ মন
বাড়ি গাড়ি যোগাড় করলাম শুধু অকারণ।
বটের ছায়ায় মাথা রেখে শীতল হাওয়ার বুকে
সকল ফেলে ঘুমাই আমি মহা শান্তি সুখে।
ফুলের সুবাস অঙ্গে পড়ি জোছনা বেজে খাই
টাকার অভাব থাকলে ও আমার সুখের অভাব নাই।
প্রকৃতির সুখ
সাংবাদিক মোঃ রাজু মিয়া